ভাগশেষ
"সময়ের মধ্যে তোমাকে খুঁজি
অথবা তোমার মধ্যে সময়
পরপর শব্দহীন বৃষ্টি
হিজিবিজি শহরে একটানা জ্বর হলে
ক্ষয়ে যায় বালিশ,
তুলোর চিৎকার শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ে..."
- ধরো ধরো শিগগির ধরো, কী গরম বাবা!
শ্রুতির কবিতাটা শেষ না হতেই, দৌড়ে এসে ওর হাতে চায়ের ভাঁড় ধরিয়ে দিলো পিয়াস। শ্রুতিও প্রচণ্ড উৎসাহ নিয়ে চায়ে ফুঁ দিতে দিতে তাকিয়ে থাকলো পিয়াসের মুখের দিকে।
"জানো, পাহাড়ী বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগে। একটা আদর আদর গন্ধ আছে... তাই না?"
- শিল্পী মন তো... তাই আর কী!
"কেন তোমার পাহাড় ভালো না?"
- আমার তো তোমাকে ভালো লাগে...
বলেই বাঁ চোখটা টিপলো পিয়াস। শ্রুতি চায়ে চুমুক দিতে দিতে আবৃত্তিটা শেষ করলো।
"চলো ওঠা যাক"
- এখনই উঠবে?
"হ্যাঁ, ওখানে প্রদীপ্তদা মিমি ওরা অপেক্ষা করছে তো..."
- এই যে বললে পাহাড় ভালো লাগে, বৃষ্টি ভালো লাগে...
"উফ, সে তো লাগেই, পাহাড়েই তো থাকছি মশাই... আচ্ছা ঠিক আছে। বুঝেছি"
- কী?
"যাও ফুঁকে এসো..."
- এই জন্যেই তো বলি, তোমার আমার সম্পর্ক জন্ম জন্মান্তরের। কী সুন্দর বুঝে গেলে বলো তো মনের কথাটা!
পিয়াস পকেট থেকে সিগারেটটা বের করতে করতে হেঁটে একটু সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। শ্রুতি মোবাইলে ছবি তুলতে ব্যস্ত।
- আগুন মিলেগা?
পিয়াস বরাবরই খুব মিশুকে প্রকৃতির। নতুন জায়গায় গিয়ে খুব তাড়াতাড়ি আলাপ জমাতে পারে। ঠিক পাশে দাঁড়ানো, বছর তিরিশের ছেলেটাকে সিগারেট ঠোঁটে নিয়ে দেখতেই লাইটার চেয়ে বসলো। ছেলেটা বেশ ক্যাসুয়ালি লাইটারটা পিয়াসের হাতে দিয়ে দিলো।
"বেড়াতে এসেছেন?"
- হ্যাঁ, আপনি বাঙালি?
"হুম। নাহলে আগুন শব্দের মানে বুঝতাম না।"
পিয়াস খানিক লজ্জায় হেসে ফেললো। ছেলেটা বেশ স্মার্ট, এবং পিয়াসের থেকে বছর দশেকের ছোটো। যদিও মনের দিক থেকে এখনও দশটা বছর পিছিয়ে আছে পিয়াস... ফুরফুরে, নরম আর ভীষণরকম প্রেমিকও।
"হাই, সপ্তক"
- ও, আ আমি পিয়াস, পিয়াস দাশগুপ্ত।
বলেই হাত দুটো জোড় করলো।
- আপনিও বেড়াতে?
"না! পাগলামো করতে!"
পিয়াস হাঁ করে সপ্তকের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
"হা হা হা! পাগল ছাড়া নিজেকে কী বা বলি! একটা ফিল্মের শুটে এসেছি।"
- ও আই সি! আপনি হিরো?
"এই বদনটা দেখে আপনার কি আমাকে তাই মনে হল?"
- না মানে... এই কিছু মনে করবেন না প্লিজ।
"ধুর মশাই! সিরিয়াস হচ্ছেন কেন? আমি পর্দার পেছনের মানুষ। বুঝলেন?"
- তা... কোন্ ফিল্ম এটা?
"হাইফাই কিছু না, একটা ছোটখাটো ছবি আর কী!"
- আ আসলে আমার মিসেসও না শর্টফিল্ম করেছেন। বিয়ের আগে। ইয়ে মানে এখন আর... এখন কবিতা নিয়ে থাকেন। থিয়েটার করেন।
"এই চলো এবার..."
শ্রুতির গলার আওয়াজে চমকে উঠলো সপ্তক।
- ওই যে আমার মিসেস। শ্রু এদিকে এসো। শ্রু মানে ওর নাম শ্রুতি...
শ্রুতি পিয়াসের পাশে এসে দাঁড়াল।
- শ্রু, উনি সপ্তক। আর ইনি হলেন আমার ওয়ান অ্যান ওনলি ওয়াইফি... মিসেস শ্রুতি দাশগুপ্ত।"
সপ্তক শ্রুতির দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো। ঠিক পিয়াসের মতোই জোড় হাতে নমস্কার করলো শ্রুতি।
- আজ আসি তাহলে? ভালো লাগলো পরিচয় হয়ে।
বলে শ্রুতিকে হাত ধরে ওখান থেকে নিয়ে এলো পিয়াস। দুজনে রাস্তা পার হয়ে গাড়িতে গিয়ে বসতেই, ড্রাইভার সহ আরও চারজন এসে গাড়িতে উঠলো। পিয়াস প্রদীপ্ত ঝুম্পা আর দেবজ্যোতি এরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের ইউনিভার্সিটি ব্যাচমেট। প্রদীপ্তর স্ত্রী মিতালিও ওদের সঙ্গে এসেছেন।
গাড়ির জানালায় ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি। শ্রুতি জানলার কাচটা নামিয়ে নিলো। হাওয়ায় চুল উড়ছে। শ্রুতির ভেতর পরপর জমছে শব্দ। বাকিরা সবাই গান আর গল্পে জমিয়ে রেখেছে সময়টা। শ্রুতির চোখ বুজে আসছে... পাহাড়ী রাস্তা, বাঁকের পর বাঁক। নাগরদোলা চলছে তো চলছেই। এখান থেকে সিলারিগাঁও আর মাত্র আধ ঘন্টার পথ।
শ্রুতি আধঘুমে আচ্ছন্ন। পাহাড়ী ফুলের গন্ধ নাকে আসতেই একটা আবছা মুখ ওর ভেতর ঘোরাফেরা করতে থাকে। ওদের বালিগঞ্জের ছোট্ট ওয়ান বি.এইচ.কে ফ্ল্যাটটাও চোখের সামনে ভেসে ওঠে। একটা হাফ প্যান্ট আর ট্যাঙ্ক টপ পরে খোলা জানলায় শ্রুতি। জানলার বাইরে তাকাতেই শয়ে শয়ে মৃতদেহ... পুড়ছে... ধোঁয়া উঠছে। গন্ধটা নাকে এসে বিঁধছে শ্রুতির। ভীষণ বিরক্ত হয়ে জানলাটা বন্ধ করতে যায় শ্রুতি... রান্নাঘর থেকে বাসন পড়ার শব্দ কানে আসে।
"অ্যাই জানোয়ার আজ তোকে মেরেই ফেলবো..."
চারিদিকে কোনও বেড়াল ছিলো না... যদিও ভুল ভাঙার পর একটুও ইতস্তত হয়নি শ্রুতি। সামনে তাকিয়ে ভীষণ বিরক্ত হয়ে বলল, "ও! তুই..." তারপর, চা-টা কোনোরকমে ঢেলে নিজের কাপটা নিয়ে বারান্দায় আসে।
"জং ধরে গেলো জীবনটায়। একটা কাজও যদি ঠিক মতো করতে পারিস! একটা পায়রার খোপ। না আছে রং না আছে কিছু। বিরক্তিকর!"
আস্তে আস্তে সন্ধে নেমে আসছে পাহাড়ের কোলে। এরপর আর পাকা রাস্তা নেই বললেই চলে। উঁচু নিচু কাদা মাখা পথ। বর্ষায় গড়ি ওঠে না এ পথে। ড্রাইভার এখানকারই হওয়ায় বেশ সাহসী। কোনোরকমে এদিক ওদিক করে চালিয়ে পৌঁছে যেতে পারলেই হল। ঝাঁকুনিতে ঘুম ভাঙে শ্রুতির। একটা খারাপ স্বপ্ন আরো বেশি করে চেপে ধরে ওকে। জলের বোতলের ছিপি খুলতেই সালোয়ার ভিজে যায়। পেছন থেকে রুমালটা এগিয়ে দেয় পিয়াস।
শুধু সেদিনের কথা নয়, প্রতিদিন এমনটাই চলছিল। ঝগড়াঝাঁটি, মারামারি, গালিগালাজ এসবের মধ্যে দুটো মানুষ। শ্রুতি সদ্য একটা বেসরকারি প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে জয়েন করেছে। সারাদিন স্কুলে হাড়ভাঙা খাটুনির পর একটু আকাশ দেখতে চায় ও। আর আকাশ পেতে গেলে আর একজন সঙ্গীর খুব প্রয়োজন। পাশে এসে বসে মাথায় হাত বোলানোর জন্য তখন আর বাবার খুব একটা দরকার থাকে না... চাই একজন সমবয়সী বন্ধু। অথচ বন্ধু হতে গেলে যে শুধু পাশে থাকলে চলে না, বরং ভেতরে মিশে যেতে হয়...
হোমস্টেতে উঠে বারান্দায় এসে দাঁড়ায় শ্রুতি। দু-চোখ ভরে আকাশ দেখে। পিয়াস এসে টাওয়েলটা এগিয়ে দেয়
- যাও ফ্রেস হয়ে নাও...
কোনও কথাই কানে যায় না শ্রুতির।
- কী হল যাও...
গায় হাত দিতেই সম্বিত ফেরে শ্রুতির। নরম গলায় জিজ্ঞেস করে
"কোন্ ফিল্মের শুট চলছিল? কোনও বড় প্রোডাকশন?"
- কী জানি! কথাই তো বলা হল না সেরকম। এই কী হয়েছে বলো তো? এসে থেকে দেখছি কেমন অন্যমনস্ক।
শ্রুতি টাওয়েলটা নিয়ে চুপচাপ রুমে আসে। তারপর ওয়াশরুমে ঢুকে বড় আয়নাটার সামনে দাঁড়িয়ে এক এক করে জামা-কাপড় খুলে ফ্যালে। ছোট ছোট চুলগুলো একটু নাড়াচাড়া করে দেখতে দেখতে চোখের সামনে লম্বা এলোচুল...মুহূর্তে অতীত আর বর্তমান মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়। শ্রুতি নিঃশব্দে কেঁদে ওঠে।
ওয়ান বি.এইচ.কে ফ্ল্যাটে একটা ছোট্ট বিছানা। একদিকে সপ্তক, অন্যদিকে শ্রুতি। ড্রেসিংটেবিলে সাজানো ফুলদানি, সিঁদুরকৌটো।
"দ্যাখ শ্রুতি, তোর হেল্প ছাড়া এটা ইম্পসিবল..."
- মানে, কী বলতে চাইছিস তুই? আ আমি বাপিকে বলবো তাই তো? সিরিয়াসলি?
"আমি কি সেটা একবারও বললাম? তোকে পাশে থাকতে বললাম শুধু।"
- আমি কালকেই বাড়ি যাচ্ছি, ব্যাস...
"বাড়ি? কেন এটা তোর বাড়ি না?"
- এটা? বাড়ি? ও মাই গড!
স্নান সেরে বিছানায় বসলো শ্রুতি। পিয়াস ব্যাগপত্র ঘাঁটছে তখন।
- আমি বের করে দিচ্ছি। কী লাগবে বলো?
"আরে মাফলারটা পাচ্ছি না..."
দরজায় নক শুনতেই এগিয়ে গিয়ে দরজাটা খুলল পিয়াস। প্রদীপ্ত ঠোঁটে সিগারেট আর হাতে ক্যামেরা নিয়ে হাজির।
"এই তাড়াতাড়ি এসো শ্রু..."
বাইরে এসে দোলনায় সপ্তককে বসে থাকতে দেখে ভীষণ উত্তেজিত হয়ে পড়ে পিয়াস।
"আরে মিঃ..."
সপ্তক একটু চমকে যায়, ঘাবড়েও যায়।
- সপ্তক… শুধু সপ্তক
"ইয়েস, সপ্তক সপ্তক... এখানেই উঠলেন তাহলে?"
- এর থেকে ভালো সিনেমা তৈরির জায়গা যে আর হতেই পারে না!
একটা স্তব্ধতা চারিদিকে। ঝর্নার সো সো শব্দে স্মৃতিরা আষ্টেপৃষ্ঠে ধরছে সপ্তককে। জংলি ফুলের মাদকতায় ছটফট করছে শরীর। মনে হচ্ছে যদি এক মূহুর্তের জন্য জাপটে ধরতে পারতো শ্রুতিকে। যদি দুটো মিনিট নাট্যমঞ্চে দাপিয়ে আসতে পারতো দুজনে... যদি কোনোভাবে বলতে পারতো না বলা চারটে বছর...
- আমি লক্ষ্য করি সবটাই...
"কী?"
- সপ্তাহে দুদিন অন্তত আনব্লক করিস, আমারও তোকে দেখার সুযোগ হয় একটু।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শ্রুতি
- তোর বরকে দেখে যদিও চিনতে পারিনি। ছবিতে অন্যরকম লাগে। যাই হোক, ভালো আছিস তো?
"আছি... কী করছিস?"
- ছোটখাটো একটা কোম্পানিতে আছি। ধারদেনা শোধ করে এখন এই চলছে... ছবি বানাই... পছন্দ না হলে মুছে ফেলি। আর পছন্দ মতো হলে শোকেসে তুলে রাখি।"
"এখনও সবটাই নিজের জন্য?"
- নিজের! হুম...
সেদিন রাত দুটোর সময় পাওনাদারদের ভিড় জমেছিল শ্রুতির বাড়ির দরজায়। বাড়ির ভেতর বাবা আর শ্রুতি। মা মারা গেছেন শ্রুতির যখন ক্লাস এইট। শ্রুতির বিয়ের পর ওর বাবা এ বাড়িতে একাই থাকেন। একটা দোকান আছে ওদের, ব্লাউজ আন্ডার গার্মেন্টস ইত্যাদির।
বাইরে প্রচণ্ড চ্যাঁচামেচি শুনে ওর বাবা বাইরে আসেন। শ্রুতিকে দেখে পরপর থ্রেট আস্তে থাকে, ঢিল পড়তে থাকে জানলায়...
"বেশি রোয়াব দেখালে না তুলে নিয়ে যাবো।"
"তোর বরকে বল সুদ সমেত আমাদের টাকা ফেরত দিতে..."
শ্রুতির বুঝতে অসুবিধে হয় না, পাওনাদাররা ফ্ল্যাটে সপ্তককে না পেয়ে এখানে এসে হানা দিয়েছে। লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায় শ্রুতির। সপ্তকের জন্য ওর বাবাকে এত বড় অপমান সহ্য করতে হবে ও কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবেনি। দোতলা বাড়ি, বাবার আদর, নিজের মতো থাকার অভ্যেস সবটা ছেড়ে একদিন বাবার অমতে রেজিস্ট্রি করেছিলো সপ্তকের সাথে। আর বিয়ের পর থেকেই এক এক করে নেমে এলো বিপদ। প্রথমে চিটফান্ড কেসে শ্রুতির বাবার কুড়ি লক্ষ টাকা গায়েব। দোকানে নতুন ব্র্যান্ডের ফ্র্যাঞ্চাইজিতে বড়ো মাপের লস। আর একবছরের মধ্যেই ওর মিসক্যারেজ... ঘুপচি গলি, জং-ধরা বারান্দা, রাতদিন স্কুল আর রিহার্সাল করার পর বাড়ি এসে ফাঁকা ডাইনিং টেবিল সবটাই অসহ্য হয়ে উঠছিল।
শ্রুতির বাবা আর একটাও কথা বলেননি সেদিন। শ্রুতির এখনও মনে পড়ে...ঘরে ঢোকার আগে ডাইনিং টেবিলে এসে জল খেলেন উনি, তারপর শান্ত গলায় বললেন,
"শ্রু, তোকে কিছু কথা বলার আছে। কাল সকালে বলবো।"
সকালে আর সে কথা বলা হয়নি বাবার। বাবা চলে গেছিলেন হার্ট অ্যাটাকে। ঘটনার প্রায় দু-মাস পর ব্যাঙ্গালোর থেকে কলকাতায় ফেরে সপ্তক। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক বুঝেই শ্রুতির সঙ্গে দেখাও করতে আসে। এই দু-মাস সপ্তকের একটাও ফোন রিসিভ করেনি শ্রুতি। সেদিন সপ্তক বাড়িতে আসতেই দরজা থেকে ওর হাতে ডিভোর্সের নোটিশ ধরিয়ে দিয়ে মুখের ওপর দরজাটা বন্ধ করে দেয় শ্রুতি।
ঝিরঝিরি বৃষ্টি। কোনও আলো নেই কোথাও। ডিনার সেরে মদ্যপানের আসর জমেছে পেছনের লনে। সামনের রাস্তাটা ফাঁকা, ভীষণ পিছল। পা টিপে টিপে এগিয়ে আসে শ্রুতি। সপ্তক দুটো আঙুল ফাঁকা করতেই সিগারেটটা নিচে পড়ে যায়...
"ওখানেই থাকিস? বালিগঞ্জের..."
- না! পায়রার খোপ ছেড়ে দিয়েছি। পয়সা কোথায়!
"এখন?"
- কেন আসবি নাকি?
শ্রুতি মুচকি হেসে বলে,
"আসবো... বন্ধু বন্ধুর কাছে যেতেই পারে..."
সপ্তক আবার একটা সিগারেট বের করে পকেট থেকে। ঠোঁটে একটা চাপা হাসি।
- বিক্রমগড়ে ফ্ল্যাট নিয়েছি... ভাড়ায়।
"একাই থাকিস?"
প্রশ্নটা শুনে একবার শ্রুতির দিকে তাকিয়ে আবার পকেটে হাত ঢোকায় সপ্তক। ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়ে। হঠাৎ একটা হাত এগিয়ে আসে। অন্ধকারে দেশলাই জ্বলে ওঠে। স্পষ্ট হয় মুখটা। পিয়াস দেশলাই হাতে, চোখেমুখে একইরকম স্নিগ্ধতা...
- আগুন
বাবা মারা যাওয়ার বছর তিনেক পর বাড়ি বিক্রির জন্য দলিলটা খুঁজতে গিয়ে চিটফান্ডের পেপারস, বেশ কিছু লোনের ডকুমেন্ট আর বাবার লেখা একটা দীর্ঘ চিঠি পেয়েছিল শ্রুতি। যদিও তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। সেদিন সপ্তক না থাকলে হয়তো ওর বাবার দোকানটা কিছুতেই বাঁচানো যেতো না, আবার দোকানটা না বাঁচালে হয়তো এতো ধারদেনায় পড়তে হতো না সপ্তককে। ওর বাবা সমস্তটাই জানিয়ে গেছিলেন চিঠিতে। অথচ সময় সত্যিটা জানতে দেয়নি। আসলে জীবনের কিছু অঙ্ক ঠিক সময়ে মেলে না, কিছুটা ভাগশেষ থেকে যায় বাকি জীবনের জন্য.