Skip to content
উলুবেড়িয়া মেলায় ফিউচার ফর নেচার ফাউন্ডেশন এর ব্যতিক্রমী সচেতনতা কর্মসূচি

উলুবেড়িয়া মেলায় ফিউচার ফর নেচার ফাউন্ডেশন এর ব্যতিক্রমী সচেতনতা কর্মসূচি

Reported BY:- অভিজিৎ হাজরা, উলুবেড়িয়া, হাওড়া

রথযাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত উলুবেড়িয়া কালীবাড়ির শতাব্দী প্রাচীন মেলায় একটি ব্যতিক্রমী সচেতনতা কর্মসূচি পালন করল ” ফিউচার ফর নেচার ফাউন্ডেশন ” , উলুবেড়িয়া ইনস্টিটিউট ও হাওড়া বনবিভাগ।কর্মসূচির মূল বার্তা ছিল – ‌” মুক্ত আকাশে উড়িয়ে দিন পাখি, এবার পুষুন গাছ ”। ভারতীয় প্রজাতির পাখি কেনা-বেচা যে বেআইনি ও অনৈতিক, তা জানানো এবং জনগণকে গাছ লাগানোর মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার বার্তা পৌঁছে দেওয়াই ছিল এই কর্মসূচির লক্ষ্য।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উলুবেড়িয়া মহিলা থানার আই.সি. শাওন বাগচী, স্থানীয় পৌরপিতা রঘুনাথ দে, বিভিন্ন ওয়ার্ডের সম্মানীয় কাউন্সিলরবৃন্দ, কালীবাড়ি পরিচালন সমিতি ও উলুবেড়িয়া ইনস্টিটিউট অ্যান্ড লাইব্রেরি-র বিশিষ্ট প্রতিনিধিগণ।বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন ফিউচার ফর নেচার ফাউন্ডেশনের কোর কমিটির সদস্য, প্রখ্যাত ইতিহাস গবেষক ও সাহিত্যিক, ” ফিউচার ফর নেচার ফাউন্ডেশন ” এর সম্পাদক শুভ্রদীপ ঘোষ , বহু গ্রন্থের রচয়িতা ড. অর্ণব দত্ত, তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব কর্মসূচিকে সাফল্যমণ্ডিত করেছে।
” ফিউচার ফর নেচার ফাউন্ডেশন ” এর সম্পাদক শুভ্রদীপ ঘোষ বলেন, ” বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ ও ভারতীয় প্রজাতির পাখি ধরা,নিধন ও চোরাচালান রুখতে ” ফিউচার ফর নেচার ফাউন্ডেশন ” বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে কাজ করে চলেছে ” । তিনি আরো বলেন, ” আমাদের আশেপাশের জীব বৈচিত্র্যের সঙ্গে আমাদের ভালো থাকা মন্দ থাকার সম্পর্ক অতি নিবিড়। পরিবেশের জীব বৈচিত্র্য ভালো রাখতে না পারলে আমাদের ভালো থাকা অসম্ভব।যুগ যুগান্তর ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মানুষের খাদ্যের যোগান দিয়ে চলছে পাখি। পাশাপাশি গাছের বীজ ছড়িয়ে বনায়ন,পরাগমিলন এবং কৃষিকাজে ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে তাদের বংশ বিস্তার রোধ করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মানুষের চিরকাল মঙ্গল করে চলেছে পাখি।‌ পাখিদের নয়নাভিরাম বর্ণময়তা নিঃসন্দেহে নান্দনিক মূল্য বহন করে তাদের কুজন আমাদের মন ভালো করার এক দারুণ ঔষধ। পাখি যা জীব বৈচিত্র্যের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যাদের বেঁচে থাকা, সঠিক সংখ্যায় থাকা এবং সুস্থ থাকার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জুড়ে আছে কৃষিজাত দ্রব্যের উৎপাদন তথা মানুষের ভালো থাকা তথা বেঁচে থাকা। ‌ কৃষিক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপায়ে অপকারী পোকা নিয়ন্ত্রণের একটি কার্যকরী উপায় পাখি। যারা এই ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গদেরকে খেয়ে প্রাকৃতিক ভাবে ফসলের ক্ষতি সাধন রোধ করে তথা কীটনাশক ব্যবহারের মাত্রা হ্রাস করে। মানুষের সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে কীটনাশক দ্রব্যের ব্যবহারের সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক। যখন থেকে বাণিজ্যিক ভাবে হাঁস – মুরগি পালন শুরু হয়েছে তখন থেকে বন্য পাখি ধরা,নিধন এবং পাচার তথা চোরাচালান নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছে। বন্যপ্রাণ আইন – ১৯৭১ অনুযায়ী পাখি ধরা, নিধন এবং পাচার তথা চোরাচালান আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। পাখিদের থেকে আমরা যা কিছু সুবিধা পাই তার ঋণ পরিশোধ করা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। আগামী দিনের পৃথিবী গড়ে উঠবে মানুষ আর প্রকৃতির মেলবন্ধনে। প্রকৃতি, মানুষ, বন্যপ্রাণকে মিলিয়ে দিতে হবে । সহযাপনের পথে হাঁটতে হবে। যেখানে মানুষ এবং না – মানুষ একসাথে থাকবে, একসাথে বাঁচবে। এই প্রকৃতি মায়ের কোলে সকলের মুক্ত হয়ে বাঁচার অধিকার আছে।যে সকল স্বার্থান্বেষী মানুষ পাখি সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণের স্বাভাবিক ভাবে বাঁচার অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তাদের নির্বিচারে নিধন ও পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলে , রুখে দাঁড়াতে হবে।যারা পাখি শিকার, পাখি নিধন ও চোরাচালান এর মতো কাজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্ৰহণ করতে হবে।
রাজদূত সামন্ত, আয়োজকদের তরফে জানান –
“ উলুবেড়িয়া সাবডিভিশন সহ রাজ্যের বহু রথের মেলায় এখনও ভারতীয় প্রজাতির টিয়া, ময়না, শালিক, বুলবুলি ইত্যাদি পাখি অবৈধভাবে কেনাবেচা হয়, যা বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন ১৯৭১ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। পাশাপাশি আপনারা আমাদের সংগঠনের কাছ থেকে একটি গাছ দত্তক নিন ও তাকে লালন করুন। গাছ বড় হলে তাতে পাখি এমনিতেই আসবে। এইভাবেই প্রকৃতির ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পথে আমরা এগিয়ে যেতে পারি।”এই মহতী কর্মসূচি একটি প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী বার্তা নিয়ে এল সমাজের প্রতি— “ পাখিকে খাঁচা নয়, দিন গাছের ডাল ”।

Leave a Reply

error: Content is protected !!