অন্ধের কিবা দিন কিবা রাত
অস্তিত্ব কোনও বিচ্ছিন্ন আয়োজন নয়
প্রবাদপ্রতিম নৈসর্গিক খোঁজ
১.
দস্যুর মতো হেঁটে যায় লাল-নীল জীবনবোধ
যতটা দেখানোর ছিলো কিংবা
যতটা দেখানো আছে বাকি
পায়ে পায়ে জড়িয়ে, প্রচ্ছন্ন নিরাকার
আশ্চর্য দেখা হওয়াটুকু
উদাসীন নিরাময় চেয়ে থাকে, একা
গ্রামোফোনে বেজে চলে কুয়াশা শৈশব
বুকের ভিতর একটা জং-ধরা শহর
২.
জীবনের স্ক্রিনশট থেকে অপ্রাপ্তিগুলো
মুছে যায়
অজুহাত বদলে নেয় প্লাজমা
জমা খরচের হিসেব থেকে আরও একটা
মাধবীলতা দিন
আকাশ ফুরিয়ে যাওয়ার আগে
এ সবই অসফল পাশবালিশ গল্প
ভালোবাসা রুখে দাঁড়ায়
সাবানকেসে জোড়াতালি কর্তব্যবোধ
৩.
সন্তান শব্দটি দিয়ে কি ঈর্ষার পরিমাপ করা যায়?
ঘুমিয়ে থাকে নরম অন্ধকার,
ছদ্মবেশী
সে তো অবিকল অন্তঃস্বার শূন্য অবয়ব
প্রায়ান্ধ হয়ে যাওয়া নিজস্ব জানলা
ঘুম থেকে ঘুম কেড়ে নিলে,
বাজি হেরে যায় অন্ধ স্তাবকতা
৪.
পাপ পূণ্য আর ঝিঝি ডাকা একাকিত্বে
এবড়ো খেবড়ো শরীর,
মুছে যায় অন্ধকারের প্রশ্নবিচিত্রা
দরজাকে বাজি রেখে
কান পাতে অবশিষ্ট আগুন
একটার পর একটা শূন্যস্থান পেরিয়ে
কাদা জল পেরিয়ে
জীবন গুছিয়ে নেয় ধূর্ত জলোচ্ছ্বাস
৫.
ভালোবাসা অন্ধ হলে
পাশাপাশি হেঁটে যায় সাজানো সংসার
দৃষ্টি বেজে ওঠে পিয়ানোয়
অসহায় ফোনকলগুলো ছিঁড়ে ফেলে
হাসি তৎপুরুষ
কিছুটা অবশিষ্ট,
ছায়া চমকের মতো বিদ্যুৎ
এর চেয়ে সহজ কি হতে পারে
একটা মুষল দৌড় শেষে
আর একবার ভেঙে যাওয়ার প্রস্তুতি
৬.
সিকোয়েন্স ভুল হয়ে যায়,
বিবর্ণ কৌতুকে হেসে ওঠে সময়ের অস্থি-চর্ম
এই যে সুন্দর পাতাবাহার জীবন
তারও একটা ভারহীন অতীত ছিলো
না শেষ হওয়া বাক্যের মতো
দীর্ঘতম প্রেম ছিলো না কোথাও
শুধু শরীর,
প্রজাপতি রঙের আদর ও প্রশ্রয়
৭.
যৌনতার কোনও অনুবাদ হয় না
দাম্পত্যের প্রতীকে গন্ধ লুকিয়ে থাকে সামাজিক
কোনও না কোনও সময়ে দেখা হয়ে যায়
মুখোমুখি
অদৃশ্য প্রশ্নোত্তর কেবল রক্তাক্ত করে
যে চলে গেছে আদৌ কি সে চলে গেছে!
সীমা উন্মুক্ত হলে
নিজেই নিজেকে কর্ষণ করে মানুষ
৮.
পুরুষ আর প্রকৃতির মধ্যে
একটা অলিখিত দ্বন্দ্ব কাজ করে
একান্নবর্তী মুগ্ধতায় স্বাভাবিক হয়ে আসে
না ছোঁয়া সঙ্গম
এ খেলায় কোনও ব্যাকরণ নেই,
অস্তিত্বের পারদ চড়লে
ভাঁজ বাড়ে কপালের
তুমি বৈপরীত্যের সংজ্ঞায়
পূর্ণিমার কথা লেখো
জেগে ওঠে সারি সারি অন্ধ কাঁকড়া
৯.
তোমাকে খুলতে খুলতে এক সময়
অন্ধ হয়ে যায় সহজলভ্য উচ্ছ্বাস
আমি দেখি ঢেউয়ের মুখোশে
সম্পর্ক ছিটকে যাচ্ছে
আমি দেখি নুন-ছাল ওঠা সময়
সাইলেন্ট রেওয়াজ খুঁজে নিয়েছে
জন্মান্তর ভারী হয়ে আসে,
বোল্ডার খোদাই করে রাখে সমুদ্র-মৈথুন
১০.
মাঝে মাঝে খুব একা হতে ইচ্ছে করে,
যতটা একা হলে নিজের মধ্যে
নিজেকে দেখা যায়
তোমার শরীরে বৃষ্টির পূর্বাভাস
তোমার চোখে বহুতল অভয়ারণ্য
নিজেকে দুমড়ে মুচড়ে
ঢেউয়ের মতো কিছুটা অমীমাংসিত
একটা না শেষ হওয়া বিষাদ
আসলে পৃথিবীর দীর্ঘতম হানিমুন