বহরমপুর প্রদেশ কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য রাজনীতির একাধিক বিতর্কিত ইস্যুতে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
সাংবাদিক বৈঠকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য— “বাংলাদেশে আরও একটা একাত্তর দরকার”—নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানান অধীর চৌধুরী। তাঁর মতে, এই ধরনের বক্তব্য শুধু বিপজ্জনকই নয়, বরং প্রতিবেশী দেশ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি উসকানিমূলক বার্তা দেয়।
একই সঙ্গে বিশ্ব ইজতেমার জন্য রাজ্য সরকারের ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ইজতেমায় কম্বল বিতরণ প্রসঙ্গ টেনে তাঁর প্রশ্ন—গঙ্গাসাগর সহ অন্যান্য হিন্দু ধর্মীয় উৎসবে কেন একই ধরনের সরকারি উদ্যোগ দেখা যায় না? এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বাবরি মসজিদ ইস্যু থেকে বিশ্ব ইজতেমা—সব মিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের রাজনীতির অভিযোগ উঠছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই রাজনৈতিক কৌশল শাসক দলের জন্য বিপাকে ফেলবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
অন্যদিকে, একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে চার্চে গিয়ে প্রার্থনায় অংশ নিলেও, অন্যদিকে ক্রিসমাস উদযাপনকারীদের উপর বজরং দলের হামলার অভিযোগ সামনে এসেছে। এই দ্বিচারিতা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে চর্চা তুঙ্গে।
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরপরই নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে WBCS সংগঠন। খসড়া ভোটার তালিকা থেকে যাঁদের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের শুনানির সুযোগ দিয়ে পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, আমলাদের ওপর প্রভাব খাটিয়ে কি SIR প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে চাইছে শাসক দল?
এদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে বাবরি মসজিদ বিরোধী মঞ্চ গঠনের ঘোষণা করা হয়েছে। প্রয়োজনে মুর্শিদাবাদে গিয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
নতুন করে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলার অভিযোগও সামনে এসেছে। কাজের অভাবে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক বাধ্য হয়ে ফের ভিনরাজ্যে ফিরে যাচ্ছেন বলে দাবি। সব মিলিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে।