বোলপুরের শিল্পীর হাত ধরে বীরভূম জেলার তৈরি মূর্তি পারি দিলো প্রতিবেশী রাজ্য উড়িষ্যা

বোলপুরের শিল্পীর হাত ধরে বীরভূম জেলার তৈরি মূর্তি পারি দিলো প্রতিবেশী রাজ্য উড়িষ্যা

এতো দিন আমরা দেবী মূর্তি তৈরির প্রসঙ্গ উঠলেই প্রথমে মাথায় আসতো মৃন্ময়ী মূর্তির কথা, কিন্তু এবার সেই ছক বাঁধা ধারণাকে বদলে সম্পূর্ণ ধাতব মূর্তি তৈরি করলেন বিশ্বভারতীর আর্ট এন্ড ক্রাফটিং বিভাগের অধ্যাপক আশিষ কুমার ঘোষ। আশিস বাবু জানান, প্রায় তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি আট ফুট লম্বা ও আট ফুট চওড়া বিশিষ্ট এই মূর্তির সুক্ষ থেকে সুক্ষ প্রতিটা কাজই তৈরি হয়েছে কাঁসা, তামা ও পিতল দিয়ে এবং এই প্রতিটা অংশকে যুক্ত করতে অবলম্বন করা হয়েছে বীরভূম জেলার আদিম ঝালাই পদ্ধতি রাংঝাল পদ্ধতি। সমগ্র কাজটি করতে সময় লেগেছে প্রায় দু’মাস।
কিন্তু হঠাৎ করে এমন পরিকল্পনা কেন? এই বিষয়ে শিল্পী আশীষ কুমার ঘোষ জানান…
.
যদিও এমন কাজ আশিস বাবুর নতুন নয়। আশিস বাবু জানান, তাঁর আসল বাড়ি পূর্বমেদিনীপুর জেলায়। পড়া শুনার সূত্রে প্রথম বীরভূমে আসেন এবং তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পড়াশুন শেষ করেন এবং বিভিন্ন দেশ বিদেশে তাঁর শিল্প কর্মের প্রদর্শনী করুন এবং দু’হাজার পাঁচ সালে পুনরায় ফিরে আসেন লাল মাটির দেশ বীরভূম, এবং সেখানেই বিশ্বভারতীর শিল্প সদনের অধ্যাপক হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন। পাশাপাশি শান্তিনিকেতনের গোয়ালপাড়া কোপায় নদী তীরবর্তী জায়গায় নিজের আর্ট স্টুডিও মৃত্তিকা উদ্বোধন করেন এবং নিজের কাজ শুরু করেন। আশিস বাবু জানান, তাঁর কাজ ইতিমধ্যেই ঠাঁই পেয়েছে বিশ্বের দরবারে। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, তাইওয়ান সহ বিভিন্ন দেশে নিজের শিল্প কলাকে ঠাঁই দিয়েছেন তিনি। ২০০৪ সালের গ্রিস অলিম্পিকে গোটা ভারত থেকে একমাত্র তিনিই ক্রাইসিস আর্ট নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন এবং ২০০৮ সালের বেজিং অলিম্পিকের মঞ্চে চল্লিশ ফুটের পাখির বাসা তৈরির জন্যও স্বর্ণ পদকে ভূষিত হন তিনি। এছাড়াও ২০০৯ সালে জিন্দাল গ্রুপ অফ কোম্পানিজ এর পক্ষ থেকে বছরের সেরা শিল্পীর সম্মাননাও ছিনিয়ে নেন তিনি। ফলে আগামী দিনেও যে তিনি তাঁর শিল্প কর্মের মধ্যে দিয়েই যে তিনি নতুন এক ইতিহাস রচনা করবেন সেই আশা আমরা অনায়াসেই রাখতে পারি।

Leave a Reply

error: Content is protected !!