কবিতা - যম দুয়ারে পড়ুক কাঁটা @ নাসরিন নাজমা স্বত্ব:লেখক
দুপুরের উজ্জ্বল রোদ উষ্ণতা ছড়াচ্ছে বাইরে
আসন্ন শীতের আভাসে রুক্ষ বাতাস।
এলোমেলো অবাধ্য চুল, অবিন্যস্ত শাড়ির তরুনীটি
একমনে বসে আছে দাওয়ায়
এখনো উপোসি..
শুকনো ঠোঁট, দুচোখের কোলে কালি
মাঝে মাঝে বিড়বিড় করছে আপনমনেই ।
যম দুয়ারে কাঁটা দিয়ে ভাইকে অমর করার মন্ত্রে
কেঁপে কেঁপে উঠছে ঠোঁটদুটি
পাশের সাজানো থালায় রাশি রাশি মিষ্টি,
আরেকটিতে ধান-দূর্বো,চন্দন বাটা, প্রদীপ
সামনে পাতা আসন খাঁ খাঁ অপেক্ষায় ,
ভাই আসবে……
বাতাসে ভাসছে পোড়া মাংসের কটূ গন্ধ
বুকের বুলেট বেঁধা ক্ষত থেকে রক্ত নদী গিয়ে মিশেছে
ব্রহ্মপুত্রের জলে
ভাইফোঁটার ওই আসনে ভাই আর ফিরবেনা কোনওদিন
একি তবে যমেরই কারসাজি!
নাকি ষড়যন্ত্রের বীজ বাড়ছে অন্য কোথাও?
যে বিষ একদিন প্রচন্ড তীব্রতায় মুছে দেবে
একটি জাতির অস্তিত্বকে!
সদ্য ভাই হারানো তরুণীর চোখে নেই কোনো নোনা আভাস
সেখানে একটু একটু করে গাঢ় হচ্ছে প্রতিবাদ
ফুটে উঠছে প্রতিজ্ঞার ভাষা
বুকের মধ্যে জ্বলছে দাউদাউ করা তীব্র আগুন।
দিহাঙ-এর জলে মিশেছে যতটা রক্তের রঙ
সেই রক্তের নামে শপথ …..
জন্মভূমিকে কেড়ে নিতে চায় যদি কোনো রঙের কারবারি
অথবা টুঁটি চিপে ধরে মায়ের ভাষার
প্রকান্ড এক অসম যুদ্ধের শেষেও
বুক দিয়ে আগলে রাখবে উপত্যকা,
যমুনার মত কাঁটা দেবে সকল ভাইয়ের মৃত্যুদুয়ারে
এবং তা মঙ্গল প্রদীপের শিখা শেষ হবার আগেই……